ধারা-৪৬- কিভাবে গ্রেফতার করতে হয়ঃ

ধারা-৪৬(১); কথা বা কার্যদ্বারা গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে দেহ স্পর্শ করে গ্রেফতার করা যায়।

ধারা-৪৬(২); আসামী গ্রেফতারের প্রচেষ্ঠায় বাধা প্রদান করলে সকল পন্থা অবলম্বন করে গ্রেফতার করা যাবে।

 ধারা-৪৬(৩); মৃত্যুদন্ড যোগ্য আসামী হলে গ্রেফতারকালে মৃত্যু ঘটনানো যাবে, অন্যথায় মৃত্যু ঘটানো যাবে না।

(পুলিশ প্রবিধান-৩১৬ বিধি, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করলে পুলিশ প্রবিধান-১৫৩(ঘ) বিধি অনুসরন করতে হবে)  

ধারা-৪৭; অনুমতি নিয়ে গ্রেফতারঃ

আসামী যদি কোন স্থানে প্রবেশ করেছে সে স্থানের মালিকের অনুমতি নিয়ে গ্রেফতার করতে হবে।

(পুলিশ প্রবিধান-৩১৬ বিধি, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করলে পুলিশ প্রবিধান-১৫৩(ঘ) বিধি অনুসরন করতে হবে)  

ধারা-৪৮; বাড়ির মালিক অনুমতি না দিলে কার্যপদ্ধতিঃ

গ্রেফতারকালে কোন বাড়ির মালিক অনুমতি না দিলে দরজা জানালা ভেঙ্গে গ্রেফতার কার্যকর করতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে, বাড়ির ভিতরে যদি কোন পর্দানশীল মহিলা থাকে, তাহলে তাকে অবাধে সরে যাওয়ার জন্য আহব্বান জানিয়ে গ্রেফতার কার্যক্রম করবো।

(পুলিশ প্রবিধান-৩১৬ বিধি)

ধারা-৪৯; মুক্তি লাভের জন্য দরজা জানালা ভাঙ্গিবার ক্ষমতাঃ

যদি কোন আসামী গ্রেফতার কালে যদি পুলিশ অফিসার নিজে  বাড়ির ভেতরে আটকা পড়েন সেক্ষেত্রে দরজা-জানালা ভেঙ্গে মুক্তিলাভ করতে পারবে।

ধারা-৫০; অনাবশ্যক বাধা প্রদান করা যাবে নাঃ

পলায়ন প্রতিরোধে যতটুকু প্রয়োজন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির উপর অবশ্যই তদ্পেক্ষা অধিক বাধা প্রদান করা যাবে না।

ধারা-৫১; গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশিঃ

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি যদি জামিন নিতে অসমর্থ হয় তাহলে দেহ তল্লাশি করে পরিধেয় বস্ত্র ব্যতিত সকল কিছু তালিকা মোতাবেক হেফাজতে নিতে হবে এবং গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে তালিকার একটি রশিদ দিবেন।

(পুলিশ প্রবিধান-৩২২ বিধি)

ধারা-৫২; মহিলার দেহ তল্লাশির পদ্ধতিঃ

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি যদি মহিলা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে মহিলার প্রতি শালীনতার  খেয়াল রেখে একজন মহিলা দ্বারা তার দেহ তল্লাশি করতে হবে।

ধারা-৫৩-অপরাধজনক অস্ত্র আটক করিবার ক্ষমতাঃ

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নিকট থেকে কোন আক্রমনাক্তম অস্ত্র পাওয়া গেলে পুলিশ অফিসার অস্ত্রমুক্ত করবেন এবং আসামীকে অস্ত্রসহ আদালতে প্রেরণ করবেন।

ধারা-৫৪; বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার (CIPSODERA);

C-Cognizable Offence (আমালযোগ্য অপরাধ করলে)

I-Implements of House Breaking (ঘর ভাঙ্গিকার সরঞ্জাম থাকলে)

P-Proclaimed Offender (ঘোষিত অপরাধী হলে)

S-Stolen Property (চোরাই সম্পত্তি পাওয়া গেলে)

O-Obstruction to Govt. Duty. (সরকারী কাজে বাধাদান করলে)

D-Deserter from Army, Navy, Airforce. (সামরিক বাহিনী হতে পলায়নকৃত)

E-Extradition offence (বিদেশে অপরাধ করে দেশে আসলে)

R-Released Convict. (যে শর্তে মুক্তি দেয়া হয়েছিল উক্ত শর্ত লঙ্গণ করলে)

A-Arrest on Requisition (কাউকে গ্রেফতারের অনুরোধপত্র পাওয়া গেলে)

ধারা-৫৫; ভবঘুরে, সন্দেহভাজন, অভ্যাগত অপরাধীকে অফিসার ইনচার্জ কর্তৃক বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারঃ

ধারা-৫৫(১)(ক); থানা এলাকার মধ্যে ভবঘুরে শ্রেণীর লোককে অফিসার ইনচার্জ বিনা পরোয়ানায়  গ্রেফতার করতে ক্ষমতাবান।

ধারা-৫৫(১)(খ); থানা এলাকার মধ্যে সন্দেহভাবন ( যার কোন প্রকাশ্য জীবিকা নাই ) এমন শ্রেণীর লোককে  অফিসার ইনচার্জ বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে ক্ষমতাবান।

ধারা-৫৫(১)(গ); থানা এলাকার মধ্যে অভ্যাগত চোর, ডাকাত, দস্যু, গৃহভঙ্গকারীকে অফিসার ইনচার্জ  বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে ক্ষমতাবান।

(পুলিশ প্রবিধান-৩১৬ বিধি)

ধারা-৫৬; বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অফিসার অধস্তনকে প্রেরণ করলে তখনকার পদ্ধতিঃ

থানা এলাকার মধ্যে ভবঘুরে, সন্দেহভাজন, অভ্যাসগত অপরাধী যেমন-চোর, ডাকাত, গৃহভঙ্গকারী ইত্যাদি শ্রেণীর লোককে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে অফিসার ইনচার্জ তার অধস্তনকে লিখিতভাবে নির্দেশ দিবেন এবং যাকে গ্রেফতার করবেন গ্রেফতারকারী কর্মকর্তা তাকে আদেশের বিষয়াদি সম্পর্কে জানাবেন এবং প্রয়োজনে আদেশটি দেখাবেন।

ধারা-৫৭; নাম ও ঠিকানা জানাইতে অস্বীকৃতি:

ধারা-৫৭(১); যখন কোন ব্যক্তি কোন পুলিশ অফিসারের সম্মুখে আমলযোগ্য অপরাধ করে তখন পুলিশ অফিসার দাবি করলে নিজের নাম ও ঠিকানা জানাতে অস্বীকৃতি জানায়, সেক্ষেত্রে তাকে গ্রেফতার করতে পারেন।

ধারা-৫৭(২); এইরূপ ব্যক্তির প্রকৃত নাম ও ঠিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে প্রয়োজনবোধে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট হাজির হওয়ার জন্য জামিনদার সহ অথবা জামিনদার ব্যতিত মুচলেকা সম্পাদনের পর তাকে ছেড়ে দেয়া যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ব্যক্তি বাংলাদেশের বাসিন্দা না হলে এক বা একাধিক বাসিন্দাকে  মুচলেকার জামিনদার হতে হবে।

ধারা-৫৭(৩); গ্রেফতারের সময় হতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এইরূপ ব্যক্তির প্রকৃত নাম ও বাসস্থান পাওয়া না  যায় অথবা সে যদি মুচলেকা সম্পাদনে ব্যর্থ হয় তাহলে তাকে নিকটস্থ এখতিয়ারবান ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করতে হবে।

ধারা-৫৮; ভিন্ন অধিক্ষেত্রে আসামী অনুসরণঃ

কোন ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন পুলিশ  অফিসার বাংলাদেশের যে কোন স্থানে উক্ত ব্যক্তিকে অনুসরণ করতে পারেন।

ধারা-৫৯; বেসরকারী লোক/জনসাধারন কর্তৃক গ্রেফতার এবং কার্যপদ্ধতিঃ

ধারা-৫৯(১); কোন জনসাধারনের সম্মুখে আমলযোগ্য অপরাধ সংগঠনকারীকে উক্ত জনসাধারন গ্রেফতার করতঃ  নিকটস্থ থানায় নিয়ে যাবেন।

ধারা-৫৯(২); এইরূপ অপরাধীকে ৫৪ ধারার আওতাভূক্ত করে পুলিশ অফিসার পুনরায় গ্রেফতার করবেন।

ধারা-৫৯(৩); এইরূপ অপরাধী আমলযোগ্য অপরাধ করেছে মর্মে বিশ্বাস করার কারণ থাকলে ৫৭ ধারার  বিধান অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এবং অপরাধ করার মত যথেষ্ঠ কারণ না থাকলে সাথে সাথে ছেড়ে দিবেন।

ধারা-৬০; গ্রেফতারকৃতকে ম্যাজিষ্ট্রেট/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট প্রেরণঃ

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারকারী পুলিশ অফিসার অনাবশ্যক বিলম্ব না করে গ্রেফতারকৃতকে এখতিয়ারবান ম্যাজিষ্ট্রেট/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট নিয়ে যাবেন।

ধারা-৬১; গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আটক রাখা যাবে নাঃ পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতাকৃতকে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আটক রাখতে পারবেন না।

ধারা-৬২; গ্রেফতার সম্পর্কে রিপোর্টঃ

থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারগণ মেট্রোপলিটন এলাকায় চীফ মেট্রোপলিটন এবং  অন্য এলাকায় জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর নিকট গ্রেফতারকৃত সমস্ত ব্যক্তি সম্পর্কে সংবাদ দিবেন।

ধারা-৬৩; গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির অব্যাহতিঃ

যে ব্যক্তি কোন পুলিশ অফিসার কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছে, তাকে নিজের  মুচলেকা অথবা জামিন অথবা কোন ম্যাজিষ্ট্রেটের বিশেষ আদেশ ব্যতিত ছেড়ে দেয়া যাবে না।

ধারা-৬৪;ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে সংঘটিত অপরাধঃ

যখন কোন ব্যক্তি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কিংবা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর উপস্তিতিতে অপরাধ সংঘটিত করে তাহলে তিনি নিজে অপরাধীকে গ্রেফতার করিতে পারেন এবং  অন্য ব্যক্তির প্রতি অপরাধীকে গ্রেফতারের আদেশ দিতে পারেন।

ধারা-৬৫;ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক অথবা ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্তিতিতে গ্রেফতারঃ কোন নির্বাহী বা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের  উপস্থিতিতে ও যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে কিংবা গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারেন।

ধারা-৬৬; পলায়নকৃত আসামীকে অনুসরণ ও পুনরায় গ্রেফতারঃ

কোন ব্যক্তি আইনসংগত হেফাজত হতে পলায়ন করলে বা তাকে ছিনাইয়া নিলে বাংলাদেশের যে কোন স্থানে তাকে অনুসরণ করে গ্রেফতার করতে পারবেন।

ধারা-৬৭; ৬৬ ধারার অধীন গ্রেফতারের ক্ষেত্রে বিধানঃ

৬৬ ধারার অধীনে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্র আইনের ৪৭, ৪৮, ৪৯ ধারার বিধান প্রযোজ্য হবে।

************************************ ধন্যবাদ ***************************************