ধারা-১; শিরোনাম ও পরিধিঃ এই সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নিমূল) আইন, ২০১৮ সালের ৬১ নং আইন। যাহা ১৪ নভেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ তারিখে প্রকাশিত হয়।
ধারা-২; সংজ্ঞা সমূহঃ
বাহকঃ বাহক অর্থ এক প্রাণী হতে অন্য প্রাণীর দেহে জীবানু বহনকারি আনুবীক্ষনিক অমেরুদন্ডী প্রানী।
সংক্রামক রোগ আইন-২(৫) ধারা
সংক্রামক রোগঃ সংক্রামক রোগ বলতে ধারা-৪ এ উল্লিখিত কোন সংক্রামক রোগ, যথা-
** ম্যালেরিয়া
** কালাজ¦র
** ডেঙ্গু
** ইনফ্লুয়েঞ্ছা
** এভিয়ান ফ্লু
** ফাইরেরিয়াসিস
** নিপাহ
** এ্যানথ্রাক্স
** মারস-কভ
** জলাতংক
** জাপানিস এ্যনকেফাইটিস
** ডাইরিয়া
** যক্ষা
** শ্বাাসনালির সংক্রামন
**এইচআইভি
** ভাইরাল হেপাটাইটিস
** টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ
** টাইফয়েড
** খাদ্যে বিষক্রিয়া
** মেনিনজাইটিস
** ইবোলা
** জিকা
** সরকার কর্তৃক নির্ধারিত
** চিকনগুনিয়া
সংক্রামক রোগ আইন-২(৮), ৪ ধারা
ধারা-৫; অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও কার্যাবলীঃ
অধিদপ্তর সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিস্তার হতে জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে কর্মকৌশল প্রনয়নসহ যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহন করবেন।
ধারা-৬; উপদেষ্টা কমিটি গঠন- মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রি, প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইহার চেয়ারম্যান হবেন।
ধারা-৭; কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলীঃ
কমিটি সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিস্তার হতে জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে কর্মকৌশল প্রনয়নসহ যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহন করবেন।
ধারা-৮; কমিটির সভা-
এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন। পাশাপাশি বৎসরে কমপক্ষে ০২(দুই)টি সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
ধারা-৯; বিশ্বস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধি বিধান প্রতিপালন-
সংক্রামক রোগের জাতীয় ও আন্তজাতিক বিস্তার হতে জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে উক্ত রোগের
প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সতর্কতা সংক্রান্ত বিষয়াবলী অনুসরণ করবেন।
ধারা-১০; সংক্রামক রোগের তথ্য প্রদান-
ধারা-১০(১); যদি কোন চিকিৎসক সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন, তবে তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করবেন।
ধারা-১০(২); যদি কোন বোর্ডিং, আসাসিক হোটেল এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত স্থানে অবস্থানরত কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে মর্মে জানেন তাহলে তিনি সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসককে জানাবেন।
ধারা-১০(৩); সিভিল সার্জন সংক্রামক রোগ বা উক্ত রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত হলে অনতিবিলম্বে মহাপরিচালনকে অবহিত করবেন
ধারা-১১; সংক্রমিক এলাকা ঘোষনা, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি–
ধারা-১১(১);মহা-পরিচালক সরকারের অনুমোদনক্রমে আদেশদ্বারা সংক্রমিত এলাকা ঘোষনা করবেন।
ধারা-১১(২); মহাপরিচালকের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহন করেও
তাৎক্ষনিক রোগ নির্মূল সম্ভব নয়, তবে সংক্রমিত এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমিত ও নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।
ধারা-১১(৩); এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে।
ধারা-১২; নমুন সংগ্রহ ও পরীক্ষা-
ধারা-১২(১); যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিশ^াস করেন যে, কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে
সেক্ষেত্রে তিনি উক্ত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা করতে পারেন।
ধারা-১২(২);ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সংগৃহীত নমুনার প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করাবেন।
ধারা-১২(৩); প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় সংক্রামক রোগের জীবানু নিশ্চিত হলে বিষয়টি তিনি সিভিল
সার্জকে জানাবেন এবং তার নির্দেশানুাসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহীত হবে।
ধারা-১৩; রোগাক্রান্ত ব্যক্তি কৃর্তক ব্যবহৃত দ্রব্যাদি– যদি কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত দ্রব্যাদিতে উক্ত রোগের জীবানু রয়েছে তা হলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে দ্রব্যাদি ধ্বংশ করবেন।
ধারা-১৪; রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সাময়িক বিচ্ছিন্নকরণ–
যদি কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, কোন সংক্রমিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করা না হলে তার মাধ্যমে অন্য কোন ব্যক্তি সংক্রমিত হবে পারেন, তাহলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে বিধিদ্বারা পদ্ধতিতে সাময়িকভাবে অন্যকোন স্থানে স্থানান্তর বা জনবিচ্ছিন্ন করতে করা যাবে।
ধারা-১৫; পরিদর্শন-সংক্রামক রোগের বিস্তার প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী এইরূপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, কোন ব্যক্তির বাসগৃহে বা দ্রব্যাদিতে জীবানু রয়েছে তালে তিনি উক্ত স্থান পরিদর্শন করবেন।
ধারা-১৬; সংক্রমিত স্থান বা স্থাপনা জীবানুমুক্তকরণ বা বন্ধকরন-
কোন স্থান বা স্থাপনায় সংক্রামক রোগের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী উক্ত স্থান পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন এবং জীবানুমুক্তকরণের নির্দেশ দিবেন।
ধারা-১৭; স্থাপনা ধ্বংশকরণ-
ধারা-১৭(১); যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট প্রতীয়মান হয় যে, জীবানুযুক্ত কোন স্থাপনা জীবানুমুক্তকরণ সম্ভব নয়, তবে তিনি সিভিল সার্জনকে অবহিত করবেন।
ধারা-১৭(২); সিভিল সার্জন উক্ত স্থাপনার মালিককে স্থাপনা ধ্বংশ করার জন্য নির্দেশ করতে পারবেন।
ধারা-১৭(৩); সিভিল সার্জন বিষয়টি মহাপরিচালকে অবহিত করবেন।
ধারা-১৮; যানবহান জীবানুমুক্তকরণের আদেশদানের ক্ষমতা– ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোন যানবাহন সংক্রামক জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তাহলে তিনি উক্ত যানবাহন বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জীবানুমুক্তকরণের জন্য গাড়ির মালিকে নির্দেশ দিবেন।
ধারা-১৯; জীবানুযুক্ত যানবহান, দ্রব্যাদি জব্দ ও পশুপাখি জীবানুমুক্ত করণ ইত্যাদি-
ধারা-১৯(১); কোন যানবাহন, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বা পশুপাখি জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হলে উহা জব্দ করবেন।
ধারা-১৯(২); ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি জব্দকৃত যানবাহনসহ পশুপাখি জীবানুমুক্ত করনের উদ্দোগ নিবেন।
ধারা-১৯(৩); জব্দকৃত যানবাহনসহ পশুপাখি জীবানুমুক্ত করা সম্ভব না হলে সিভিল সার্জনকে অবহিত করে। মহাপরিচালকের পরামর্শক্রমে উহা ধ্বংশ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করবেন।
ধারা-২০; মৃতদেহ সৎকার–
যদি কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নির্দেশনা মোতাবেক দাফন ও সৎকার করা হবে।
ধারা-২১; আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়-
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সংক্রামক রোগ বহন করতে পারে এইরূপ খাদ্য, পন্য, পশুপাখি বা অন্য কোন পদার্থ আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সাথে সমন্বয় সাধন করবেন।
ধারা-২২; আমদানী ও রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা-
ধারা-২২(১); আমদানী ও রপ্তানীর আদেশে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি খাদ্য, ভোগ্যপন্য বা নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি আমদানি বা রপ্তানি করতে পারবেন না যদি- উক্ত পন্যে মানুষের অবশেষ, মানুষের টিস্যু বা অংশবিশেষ সংক্রামক রোগের জীবানু থাকে; এই আইনের অধীন প্রনীত বিধি অনুযায়ী কোন ক্ষতিকারক, জীব পদার্থ বা জীবানু থাকে।
ধারা-২২(২); আমদানী ও রপ্তানীর আদেশে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ফুল, উদ্ভিদ, পশুপাখিও নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি আমদানি বা রপ্তানি করতে পারবেন না যদি- উক্ত পন্যে কোন সংক্রামক রোগের জীবানু থাকে;
এই আইনের অধীন প্রনীত বিধি অনুযায়ী কোন ক্ষতিকারক, জীব পদার্থ বা জীবানু থাকে।
ধারা-২৩; সরকারি ব্যয়ের অর্থফেরত গ্রহন-
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কোন যানবাহন, স্থান বা স্থাপনা জীবানুমুক্তকরণের জন্য ব্যয়িত সরকারী অর্থ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ফেরত গ্রহন করতে পারবেন।
ধারা-২৪; সংক্রামক রোগের বিস্তার এবং তথ্য গোপনের অপরাধের দন্ড-
ধারা-২৪(১); যদি কোন ব্যক্তি সংক্রামক জীবানুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটতে সহায়তা করেন বা জ্ঞাত থাকা সত্তে¡ও অপর কোন ব্যক্তি সংক্রামিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসার সময় সংক্রমনের ঝুকির বিষয়টি তার নিকট গোপন করেন তাহলে উক্তরূপ কার্য হবে একটি অপরাধ।
ধারা-২৪(২); উপরোক্ত অপরাধ সংঘটনে অনুর্ধ্ব ০৬ মাস এবং ০১(এক) লক্ষ টাকা দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ধারা-২৫; দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশপালনে অসম্মতি জ্ঞাপনের দন্ড-
ধারা-২৫(১); যদি কোন ব্যক্তি- মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তার উপর অর্পিত কোন দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন; সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন তা উক্ত কার্য হবে একটি অপরাধ।
ধারা-২৫(২); উপরোক্ত অপরাধ সংঘটনে অনুর্ধ্ব ০৩ মাস এবং ৫০ হাজার টাকা দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ধারা-২৬; মিথ্যা বা ভুলতথ্য প্রদানের অপরাধ ও দন্ড–
ধারা-২৬(১); যদি কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জ্ঞাত থাকা সত্তে¡ও ইচছাকৃতভাবে
মিথ্যা বা ভুল তথ্যা প্রদান করেন তা তা হবে উক্ত কার্য হবে একটি অপরাধ। ধারা-২৬(২); উপরোক্ত অপরাধ সংঘটনে অনুর্ধ্ব ০৫ মাস এবং ২৫ হাজার টাকা দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ধারা-২৭; ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ-
এই আইনের অধীনে সংঘটিত কোন অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, অনুসন্ধান, বিচার ও আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধিনাবলী প্রযোজ্য হবে।
ধারা-২৮; সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নিমূর্ল) আইনের অপরাধ-
সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নিমূর্ল) আইনের অপরাধ সমূহ অ-আমলযোগ্য হবে।
ধারা-২৯; আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা-
এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে সরকার প্রয়োজেন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহন করবেন